তুলসী | Basil | বেসিল

 বেসিল বা তুলসী কে “গাছড়ার রাণী” বা “জীবনের স্পর্শমণি” বলা হয়। #basil

অন্যান্য গাছড়ার মধ্যে এর একটি অতুলনীয় মর্যাদা রয়েছে এর ঔষধীয়, রন্ধন বিষয়ক এবং আধ্যাত্মিক বৈশিষ্ট্যের জন্য।
তুলসী তিনটি ধরণের হয়।
রাম তুলসী যার সবুজ পাতা,
কৃষ্ণ তুলসী যার বেগুনি পাতা এবং
বন তুলসী যেটি একটি বুনো ধরণ এবং এর হালকা সবুজ পাতা
তুলসী গাছ ভারতে বৈদিক কাল থেকে ফলানো হয়ে আসছে এবং হিন্দুরা এটিকে পবিত্র মনে করে। এটি সাধারণত মন্দিরের আশেপাশে রোপণ করা হয় এবং বেশিরভাগ ভারতীয় বাড়িতে পাওয়া যায়। তুলসী গাছের মাপ এবং রঙ ভূগোল, বৃষ্টিপাত এবং গাছের ধরণের ওপর নির্ভর করে।
রান্না থেকে ওষুধ অবধি এর বিস্তৃত ব্যাপ্তি রয়েছে ব্যবহারে। তুলসীর সুগন্ধ এবং তিক্ত স্বাদ সালাদ এবং সসের সাথে খেলে জিভে জল চলে আসে।শেফ জাহেদ এর মতে ইতালির লিগুরিয়া পাহাড়ে জেগে ওঠা তাজা, বুনো তুলসীর তৈরি একটি সস,
পেস্টো এখন একটি জনপ্রিয় সস যা কেবল পাস্তা ছাড়াও অনেক কিছুর সাথে ব্যবহৃত হয়। রসুন, তুলসী, পাইন বাদাম, পরমেশান বা রোমানো পনির এবং জলপাই তেল দিয়ে তৈরি,
এটি টোস্টযুক্ত রুটিতে ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে,
পিজ্জার উপর ব্যবহার করা হয় বা
এটি একটি স্যুপে মিশ্রিত করা যায়। প্রাচীনকালে তুলসীকে শুদ্ধতার প্রতিক ধরা হত। বিশ্বাস করা হয় যে তুলসী গাছের সামনে গিয়ে এর ঘ্রাণ নিলেই অনেক ধরণের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
আধ্যাত্মিক মর্যাদার কারণে তুলসীকে পবিত্র তুলসী বলা হয়ে থাকে। আয়ুর্বেদে, তুলসী পরিচিত বিস্তৃত স্বাস্থপকারিতার প্রদানকারী হিসেবে। তুলসীর জীবাণু-বিরোধী, প্রদাহ-বিরোধী, বাত-বিরোধী, কেমো-প্রতিরোধী, যকৃৎ সুরক্ষাকারী, ডায়বিটিস-বিরোধী, হাঁপানি-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
তুলসীর ব্যপারে কিছু মৌলিক তথ্যঃ
বোটানিকাল নামঃ অসিমাম সাঙ্কটাম
পরিবারঃ লামিয়াসি
প্রচলিত নামঃ তুলসী
সংস্কৃত নামঃ তুলসী
অন্যান্য নামঃ পবিত্র তুলসী, রাম তুলসী, শ্যাম তুলসী
উৎস এবং ভৌগোলিক অবস্থানঃ তুলসী ভারতের স্থানীয় এবং এটি মধ্য আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলেও পাওয়া যায়।
মজাদার তথ্যঃ পরিবেশবিদ এবং বৈজ্ঞানিকেরা তাজ মহলের পাশে দশ লাখ তুলসী গাছ পুঁতেছেন এই স্মৃতিস্তম্ভটিকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যে।
তুলসীর পুষ্টিগুণের তথ্য -
তুলসী প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ বস্তু, খাদ্যগত ফাইবার, ফ্লাভোনয়েড এবং বিবিধ জৈব যৌগর একটি ভাল উৎস। এতে থাকা ফ্লাভোনয়েড ব্রণ, হাঁপানি, প্রদাহ এবং শ্বাসজনিত সমস্যায় সাহায্য করতে পারে।
তুলসীর স্বাস্থপকারিতা -
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেঃ তুলসী একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সক্রিয় জৈব যৌগ থাকার দরুন। এই গুনের কারণে এটি আপনার ত্বক এবং চুলের জন্য দুর্দান্ত। এটি আপনার শরীরকে শুধুমাত্র অক্সিডেটিভ চাপ এবং ক্ষতি থেকেই রক্ষা করে তা নয় এটি আপনার ত্বক এবং চুলের বিন্যাস উন্নত করে। উপরন্তু, এটি সরিয়াসিস, কুষ্ঠ, চর্মরোগের মত বিভিন্ন ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটি একটি জীবাণু-বিরোধী প্রতিনিধি এবং এটি ত্বকে আঘাত বা পোকার কামড় নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। চুলের প্রসঙ্গ এলে, তুলসীর ব্যবহারে শুধুমাত্র চুল পাকা বিলম্বিত হয় বা চুল পড়া কমায় তা নয়, টাক পড়ার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
মৌখিক স্বাস্থের জন্যঃ তুলসী দাঁতের ক্ষয়, দাঁতে ব্যথা এবং জিঞ্জিভাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর।
পেটের জন্যঃ তুলসী কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। তুলসীর মিশ্রণ খিদে বাড়াতে কার্যকর।
চাপের জন্যঃ তুলসী কার্যকর শারীরিক, মানসিক, রাসায়নিক এবং বিপাকীয় চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর।
চোখ এবং কানের জন্যঃ চোখের ড্রপের আকারে তুলসীর ব্যবহার গ্লকোমা, ছানি এবং আঞ্জনির মত অবস্থা থেকে রেহাই দেয়। তুলসী মধ্য কানের সংক্রমণ এবং ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।
ক্যানসারের বিরুদ্ধেঃ প্রচুর গবেষণা তুলসীর ক্যানসার-বিরোধী সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখেছে এবং এটিকে পাকস্থলীর ক্যানসারের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও কার্যকর পাওয়া গেছে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

dnt share any link

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম