রসুন | GARLIC হল পিঁয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁঝালো সবজি যা রান্নার মশলা ও ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
গাছঃ একটি সপুষ্পক একবীজপত্রী লিলি শ্রেণীর বহুবর্ষজীবী গুল্ম। বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালিয়াম স্যাটিভাম (Allium sativum)।
বর্ণনাঃ রসুনে রয়েছে এলিসিন যা ব্রডস্পেকট্রাম যা অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। তা ছাড়া এলিসটাটিন, এলিসাটিনসহ নানা প্রকার কার্যকর উপাদান রয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি মাঝারি সাইজের রসুনে এক লাখ ইউনিট পেনিসিলিনের সমান অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি অ্যামিবিক ডিসেনট্রি নির্মূলের ক্ষেত্রে রসুন বেশ কার্যকরী।
চাষঃ জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ ও সহজেই গুঁড়া হয় এমন মাটি রসুনের উপযোগী।
ব্যবহারঃ মসলা হিসেবে রসুন ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বিভিন্ন আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে রসুনের ব্যবহার রয়েছে। রসুন যেমন আমাদের রসনাতৃপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তেমনি রসুন দিয়ে নাকি ভ্যাম্পায়ার তাড়ানো হয়। শতকের পর শতক ধরে রসুন নিয়ে এমনই সব কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে এমনকিছু ‘মিথ’ আছে, যা ৭০০০ বছরেরও বেশি পুরানো।
১) ইউরোপে ‘হোয়াইট ম্যাজিক’-এর নাকি মূল মাধ্যমই হচ্ছে রসুন। এমনকী, এই রসুন দিয়ে ইউরোপিয়ানরা ভ্যাম্পায়ারদের মোকাবিলা করেন। রসুনের মালা বা রসুন ঘরের সামনে ঝুলিয়ে রাখলে ভ্যাম্পায়াররা আসতে পারে না বলে বিশ্বাস।
২) কর্পূরের সঙ্গে পোড়া রসুন মেশালে মশা, মাছি, পোকামাকড়ের হাত রেহাই পাওয়া যায়। রসুনকে পিষে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘর মুছলেও পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৩) রসুনে ১৭ মাত্রার অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এই অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে কাজ করতে সাহায্য করে। কারণ, মানুষের শরীরে ৭৫ শতাংশে থাকে এই অ্যামিনো অ্যাসিড।
৪) শেফ জাহেদ এর মতে চাইনিজ খাবারে রসুন বেশি ব্যবহার হওয়ার কারণ সেখানে বিশ্বের ৬৬% রঁসুন উৎপাদন হয়।
৫) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জখম সৈনিকদের গ্যাংগ্রিনের চিকিৎসাতে সালফারের ভাণ্ডার কম পড়লে রসুন ব্যবহার করা হত।
৬) রসুন হার্টের পক্ষে খুবই ভাল। কারণ, কাঁচা রসুন খেলে কোলেস্টোরল কমে। সর্দি-কাশিতেও রসুনের পথ্য মারাত্মক রকমের কার্যকারি।
৭) হাত থেকে রসুনের গন্ধ দূর করতে, ঠান্ডা জলের মধ্যে স্টিলের বাসনে হাত ঘসুন। গন্ধ দূর হবে।
৮) ১৯ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে ‘গার্লিক ডে’ পালিত হয়।
৯) বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারেও রসুন ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লাসুন কি ক্ষীর’।[৬]
পুষ্টি মূল্যঃরসুনে আমিষ, প্রচুর ক্যালসিয়াম ও সামান্য ভিটামিন ‘সি’ থাকে।
রসুনের_উপকারিতাঃ
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
২. অন্ত্রের জন্য ভালো
৩. শরীরকে ডি-টক্সিফাই করে
৪. শ্বসন
৫. যক্ষ্মা প্রতিরোধক
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
৭. হজমের সমস্যা মুক্তি
৮. জমে যাওয়া কফ থেকে মুক্তি
৯. যৌনতা বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকা
১০. হৃদপিন্ডের সুস্থতা
১১. গিট বাতের সমাধান
১২. শরীরের ফোড়া সারাতে
১৩. চুল পাকানো কমায়
১৪. ব্রনের সমস্যা দূর করতে
১৫. পেটের কৃমি নিরাময়
১৬. রক্ত পরিষ্কার রাখে
১৭. ঠান্ডা ও জ্বরের মহৌষধ
১৮. ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুঘটিত রোগ প্রতিরোধ
১৯. চোখে ও দাঁতের যত্নে রসুন
২০. ত্বকের যত্নে রসুন প্রস্রাবে
২১. হাড়ের বিভিন্ন রোগ এছাড়া ও রসুন ফোড়া ভালো করে, ঋতুস্রাব চালু করে, পেশাব জারী/স্বাভাবিক করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে যৌন ক্ষমতা সৃষ্টি করে, বীর্য বৃদ্ধি করে, গরম স্বভাব লোকদের বীর্য গাঢ় করে, পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন, এ্যাজমা এবং কাঁপুনি রোগেও উপকার সাধন করে।