এলাচ | Cardamom

 এলাচ ::

এলাচি হল জিনজিবারেয় (আদা জাতীয় উদ্ভিদ) পরিবারের এলিটারিয়া এবং আমোমাম গণের বিভিন্ন গাছের বীজ থেকে উৎপাদিত একটি মশলা। উভয় গণের উদ্ভিদ দক্ষিণ এশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় উদ্ভিদ। তারা তাদের ছোট বীজ শুটি দ্বারা স্বীকৃত: ক্রস বিভাগ এবং টাকু আকৃতির ত্রিভুজাকৃতি, একটি পাতলা পাপড়ির মত বহিস্থ আবরণে মধ্যে ছোট ও কালো বীজ।
এলাচের জন্য ব্যবহৃত প্রজাতি গুলি গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং প্রায়-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এশিয়া জুড়ে স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হয়। এলাচের প্রথম উল্লেখ সুমের এবং ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে পাওয়া যায়।আজকাল, এটি অন্যান্য দেশেও চাষ হয়, যেমন:) গুয়াতেমালা, মালয়েশিয়া এবং তানজানিয়া
এলাচ খাবার এবং পানীয় উভয় প্রকারে স্বাদ এবং #রান্না #মশলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়, এবং ওষুধ হিসাবে ছোট এলাচ (সবুজ এলাচ) একটি মশলা, চর্বণসংক্রান্ত এবং, ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়; এটি ধূমপানেও ব্যবহৃত হয়।
এলাচের একটি শক্ত ও তীব্র সুগন্ধযুক্ত অনন্য স্বাদ রয়েছে। কালো এলাচের স্পষ্টভাবে আরও ধূমপায়ী স্বাদ রয়েছে, যদিও তেতো নয়, সুগন্ধযুক্ত, কিছু শীতলতাসহ কিছুটা পুদিনার মতো মনে হয়।


সবুজ এলাচ ওজন দ্বারা সবচেয়ে ব্যয়বহুল মশলাগুলির মধ্যে একটি তবে স্বাদ দেওয়ার জন্য খুব কম প্রয়োজন। এটি শুটি করে সবচেয়ে ভাল সংরক্ষণ করা হয়, যেমন উন্মুক্ত বা গ্রাউন্ড বীজগুলি তাদের স্বাদটি দ্রুত হারাতে পারে। শুঁটি এবং বীজ একসাথে পিষলে মান এবং দাম উভয় হ্রাস পায়। পুরো এলাচ শুটি প্রয়োজন রেসিপি, একটি সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য মান হল ১.৫ চা চামচ সমতুল্য ১০ শুটি এলাচ।

এটি ভারতীয় রান্নার একটি সাধারণ উপাদান। নর্ডীয় রাষ্ট্রসমূহে এটা প্রায়ই ব্যাকিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয় বিশেষ করে সুইডেন, নরওয়ে, এবং ফিনল্যান্ড, যেখানে এটি ঐতিহ্যগত একইরূপে ব্যবহার করা হয়, যেমন স্ক্যান্ডিনেভীয় জুলি রুটি জুলেকাকে, সুইডিশ কার্ডেমুম্মাবুল্লার সুইট বান, এবং ফিনিশ মিষ্টি রুটি যেমন পুল্লা। মধ্যপ্রাচ্যে সবুজ এলাচি গুঁড়ো মশলা জাতীয় খাবারের জন্য মশলা হিসাবে ব্যবহৃত হয়, পাশাপাশি কফি এবং চাতে ঐতিহ্যবাহী স্বাদও হয়। এলাচি সুস্বাদু খাবারগুলিতে বিস্তৃত পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। মধ্ প্রাচ্যের কয়েকটি দেশে কফি এবং এলাচ প্রায়শই কাঠের মর্টার, একটি মিহবাজ এবং কাঠ বা গ্যাসের উপরে স্কিললেট, একটি মেহমাসে #রান্না করা হয়, যাতে প্রায় ৪০% এলাচ মিশ্রণ তৈরি করা যায়।

খাবার খেতে বসলে মুখে এলাচ চলে গেলে মুখের স্বাদটাই মাটি হয়ে যায় অনেকের। মনে মনে ভাবতে থাকেন এলাচ খাবারে না দিলেই কি নয়? কিন্তু সত্যিই এই এলাচ রান্নাতে না ব্যবহার করলেই নয়।
কারণ রান্নার স্বাদ ও গন্ধ বাড়ানো এলাচের অন্যতম কাজ। কিন্তু আপনি জানেন কি রান্না ছাড়াও আপনি এলাচ খেলে তা আপনার ১০ টি শারীরিক সমস্যা দূরে রাখবে? অনেকেই হয়তো বিষয়টি জানেন না। কিন্তু প্রতিদিন মাত্র ১ টি এলাচ খাওয়ার ফলে নানা রকম সমস্যার সমাধান পাবেন।
এলাচ দু’রকমের। বড় ও ছোট। বড় এলাচ এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের শীত প্রধান অঞ্চলে প্রচুর জন্মায়। বড় এলাচের ৫০ প্রজাতির মধ্যে এ উপমহাদেশে বহু আগে থেকে বেশ কয়েকটির ফলন হয়। শেফ জাহেদ এর মতে সিলেট অঞ্চলে যে এলাচ জন্মে, তার নাম মোরঙ্গ এলাচ। আমাদের দেশে জঙ্গলে যে আদা গাছ জন্মায়, বড় এলাচ গাছ দেখতে অনেকটা সে রকম।

১) এলাচ এবং আদা সমগোত্রীয়। আদার মতোই পেটের নানা সমস্যা এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে এলাচ অনেক কার্যকরী। বুক জ্বালাপোড়া, বমি ভাব, পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটির হাত থেকে মুক্তি পেতে এলাচ মুখে দিন।
২) দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে দিতে এলাচের জুড়ি নেই। এলাচের ডিউরেটিক উপাদান দেহের ক্ষতিকর টক্সিন পরিষ্কারে সহায়তা করে।
৩) রক্তনালীতে রক্ত জমে যাওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। এলাচের রক্ত পাতলা করার দারুণ গুনটি এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে। প্রতিদিন এলাচ খেলে রক্তের ঘনত্ব সঠিক থাকে।
৪) এলাচের ডিউরেটিক উপাদান উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম। দেহের বাড়তি ফ্লুইড দূর করে এলাচ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
৫) মুখে খুব বেশি দুর্গন্ধ হয়? একটি এলাচ নিয়ে চুষতে থাকুন। এলাচ মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
৬) নিয়মিত এলাচ খাওয়ার অভ্যাস মুখের দুর্গন্ধের পাশাপাশি মাড়ির ইনফেকশন, মুখের ফোঁড়া সহ দাঁত ও মাড়ির নানা সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
৭) গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এলাচ খাওয়ার অভ্যাস ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এলাচ দেহে ক্যান্সারের কোষ গঠনে বাঁধা প্রদান করে থাকে।
৮) এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে বয়সের ছাপ, রিংকেল,বলিরেখা ইত্যাদি পড়তে বাঁধা প্রদান করে। এলাচ ত্বকের ক্ষতি পূরণেও বেশ সহায়ক।
৯. শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা হুপিংকাশি, ফুসফুস সংক্রমণ ও অ্যাজমার মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এলাচ খুবই উপকারী।
১০. মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পেতে এলাচ তেলের ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যায়।
১১. এটি অনুভূতি নাশক ও অস্থিরতাকে প্রশমিত করে।
১২. কালো এলাচ হার্ট সুস্থ রাখে, রক্তচাপ ও ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ায়।
১৩. কালো এলাচ হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এ ছাড়া এলাচ রক্তসঞ্চালনে সহায়ক।
১৪. এতে থাকে ভিটামিন সি, যা রক্তসঞ্চালন ও ত্বক সমস্যা দূর করে।
১৫. রূপচর্চায় এর জুড়ি নেই, রূপচর্চা ও চেহারার কালো দাগ দূর করতে এলাচের জুড়ি নেই।



হজমের সমস্যায়:
এলাচ আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে এবং হজমে সাহায্য করে।
শ্বাসকষ্টে:
মধু, লেবুর রস, গরম পানির সাথে একটা এলাচ পিষে মিশিয়ে পানিটুকু পান করালে তা শ্বাসকষ্ট দূর করবে।
হৃদরোগে:
এলাচ হৃদরোগ নিরাময়ে ফলদায়ক। হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে:
একটি এলাচ নিয়ে চিবালে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের সমস্যায়:
কারো ত্বকে কালো ছোপ ছোপ দাগ থাকলে তা দূর করতে এলাচ বেটে দাগে নিয়মিত লাগালে দাগ চলে যাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বর কমাতে:
কোষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বরে উভয় সমস্যায় এলাচ খুব কাজের। এলাচ, বেল ও দুধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ভালো করে গরম করে যখন ঘন হয়ে আসবে তখন তা একটু ঠাণ্ডা করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বর কমে যাবে।
বিষণ্ণতা দূর করবে।
গরম পানিতে এলাচ গুড়ো ও মধু দিয়ে ফুটিয়ে চা বানিয়ে খেলে মনের বিষণ্ণতা দূর হয়।

১)এলাচে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম। বরং প্রচুর প্রোটিন রয়েছে।
২) এলাচ ক্ষুধা বাড়ায় ও হজমে সহায়তা করে।
3) শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে উপকারী।
৪) কাশি দূর করে।
৫) পেট ফাঁপা হলে এলাচ গরম
পানিতে মিশিয়ে সেই পানি খেলে পেট ফাঁপা চলে যাবে।
৬) চোখের জ্বালাপোড়া কমাতে এলাচ দানার সঙ্গে সমপরিমাণ চিনি মিশিয়ে পিষে ওই গুঁড়া খেয়ে খেলে চোখের জ্বালাপোড়া কমে যাবে।
৭) প্রস্রাব হলুদ হলে এলাচের গুঁড়ার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে প্রস্রাব এর সমস্যা দূর হয় ।
৮) বারবার বমি হতে থাকলে এলাচের ছোবড়া পুড়িয়ে ওই ছাই মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

dnt share any link

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম