ভেগান বা নিরামিষাশ খাদ্য তালিকায় কোনো প্রকার প্রাণীর কোনো মাংস থাকে না।এদের খাদ্য তালিকায় শুধু যে মাংস থাকে না এমন নয়। পোল্ট্রি, মাছ, দুগ্ধজাতীয় খাবার, ডিম ও মধু— এসবের কোনো কিছুই খান না একজন ভেগান।
Vegan শব্দ টি এসেছে veganism থেকে । Vegan হল এক ধরণের নিরামিষ ডায়েট যা মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য এবং অন্যান্য সমস্ত প্রাণী থেকে প্রাপ্ত উপাদান বাদ দিয়ে তৈরি খাবার।কোনো প্রকার প্রাণিজ বা প্রাণী থেকে তৈরি উপাদান ছাড়াই সম্পূর্ণ শাক সবজি এবং উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি হয় vegan food ।
•আমরা কেউ কেউ আমিষ খেতে পছন্দ করিনা এমন কি গন্ধও সহ্য করতে পারিনা ।
•আবার কারো কারো মাছ মাংসে এলার্জি বা health issue দেখা যায় আমিষ খেতে মানা ।
•আবার কখনো আমিষ খেতে খেতে একঘেয়ামী লাগছে রুচির পরিবর্তন চাই ।
•আবার কখনো একি ভাবে রান্না করে স্বাদ পাচ্ছিনা একটু অন্য ভাবে একি সবজি ভিন্ন স্বাদে পেতে চাই ।
এসব সমস্যার সমাধান ও সম্পূর্ণ শাক সবজি আর উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি, স্বাস্থ্য সম্মত পুষ্টিকর খাবার vegan Food
ভেগানিজমের ইতিহাস: ১৯৪৪ সালে যুক্তরাজ্যের ডাল্টন ওয়াটসন প্রতিষ্ঠা করেন ভেগান সোসাইটি। মি. ওয়াটসনই 'ভেগান' শব্দটির প্রচলন ঘটান।
তাই, ভেগান শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় এমন একজন ভেজিটেরিয়ান যে, এমনকি দুধ ও ডিম জাতীয় খাদ্যও গ্রহণ করে না।
খাদ্য তালিকায় মাংস না থাকাটা নতুন কিছু নয়।শেফ জাহেদ এর মতে আজ থেকে আড়াই হাজারের বেশি (২৫০০) সময় আগে প্রাচীন ভারতে এই চর্চা ছিল। এ ছাড়া ভূমধ্যসাগরীয় এলাকাতেও এমন প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।
কলিন স্পেনসার তার বই 'ভেজিটেরিয়ানিজম: অ্যা হিস্ট্রি' গ্রন্থে ভারতে নিরামিষ আহারের শুরুর দিকের ঘটনা বলেছেন।
গ্রীক গণিত শাস্ত্রবিদ পিথাগোরাস নিজেও সকল প্রাণীর প্রতি মমত্ব ও দয়া প্রদর্শনের পক্ষে বলেছেন। পিথাগোরাস ছিলেন প্রাচীন গ্রিক নাগরিক। খ্রিস্টের জন্মের ৫শ' বছর আগে তিনি জীবিত ছিলেন।
সত্যি বলতে কি, 'ভেজিটেরিয়ান' ধারা জনপ্রিয় হয়ে উঠার আগে 'পিথাগোরিয়ান ডায়েট' অর্থাৎ যারা খাদ্য তালিকায় মাংস পরিহার করতে তাদেরই বলা হতো পিথাগোরিয়ান ডায়েট মেনে চলা মানুষ।
শেফ জাহেদ এর মতে যুক্তরাজ্যে এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৪৯ ভাগ মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্য তালিকায় মাংস না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।কারণ গরুর মাংস ও প্রক্রিয়াজাত করণ কৃত কৌটার মাংস খেলে অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে বলে সাম্প্রতিক অনেক গবেষণাতেই তথ্য উঠে এসেছে।
কিন্তু নিরামিষাশী হয়ে গেলে কি সত্যি-সত্যি আপনার স্বাস্থ্যের কোনো উপকার হবে?
সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণা জানায় যে, হ্যাঁ,
ভেগান হলে স্বাস্থ্যের কিছু উপকার সত্যিই হয় বটে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ভেগান হলেই কেউ দীর্ঘ জীবন পাবে।
গ্লোবাল ডাটা রিপোর্ট বলছে, সারা দুনিয়া জুড়েই লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে ভেগানিজম বা নিরামিষাশীদের সংখ্যা। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই গত তিন বছরে ভেগানিজমের বিস্তার হয়েছে ৬০০% এর বেশি।
আর ভেগান সোসাইটির তথ্য মতে, গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে ভেগানিজমের বিস্তার বেড়েছে ৪০০%।
বৈশ্বিক ভাবেও মাংস-বিহীন খাবারের চাহিদা ২০১৭ সাল নাগাদ এক হাজার গুণ (১০০০%) বেড়েছে বেড়েছে।
আর 2020 সাল নাগাদ ভেগানিজমকে বিবেচনা করা হচ্ছে সবচেয়ে বড় ফুড ট্রেন্ড বা খাদ্যাভ্যাসের প্রবণতা।