আঞ্জির | Fig

আঞ্জির / Fig 

আঞ্জির / Fig
আঞ্জির / Fig 

হচ্ছে ডুমুর জাতীয় এক ধরনের ফল। এর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica । এটি Moraceae পরিবারের Ficus গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই মিষ্টি এবং মুচমুচে ফলটা শুধুমাত্র এর স্বাদের জন্য বিখ্যাত তাই নয়, অধিকন্তু এর স্বাস্থ্যকর উপযোগিতাগুলির জন্য হাজার হাজার বছর ধরে কর্ষিত এবং ব্যবহৃত হয়ে আসছে।ফাইকাস গণভুক্ত প্রায় ৮০০ প্রজাতির মধ্যে আঞ্জির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি। এই ফলের আকার কাকডুমুর-এর চাইতে বড়; এটি একটি জনপ্রিয় মিষ্টি ও রসালো ফল। আঞ্জির গাছ ৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। হিন্দি, মারাঠি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় এই ফলকে আঞ্জির বলা হয় এবং আরবি ভাষায় এর নাম ত্বীন।পৃথিবীর অনেক দেশে এর চাষ হয়, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয় এবং এটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আফগানিস্তান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য।

ডুমুরগুলি কিভাবে ব্যবহার করা হয়?

ডুমুর টাটকাভাবে, ঠিক গাছ থেকে এটা তুলে আনার পরেই, খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু টাটকা ডুমুরের লভ্যতা এবং সংরক্ষণ এত সুলভ নয়। এজন্য, খাবারটার সংরক্ষিত অথবা শুকনো রূপ বেশির ভাগ ব্যবহৃত হয়। 

টাটকা ফলটা যেখানে একটু বেশি রসালো হিসাবে পরিচিত, শুকনো ফলটা হল মিষ্টি, চর্বণযোগ্য এবং এর বীজগুলি একটা স্পষ্ট মুচমুচে ভাব এটাকে দেয় যার জন্য এর প্রতিটা কামড় একে কদরযোগ্য করে। একটা নিরাময়কারী ফলের একটা মুখরোচক ডোজের চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে যদি আপনি ডুমুর যোগ করার উপায়ের জন্য ভাবেন আপনি জেনে খুশি হবেন যে শুকনো ডুমুর একক ভাবে অথবা স্যালাডে অথবা সকালের সিরিয়াল এবং কর্নফ্লেক্স-এর সাথে খেতে পারেন। এটা দুধ অথবা অন্যান্য ফলের সাথে মিশিয়ে ঘন, সুষম পানীয় এবং মিল্কশেক তৈরি করা যেতে পারে অথবা সেগুলো আপনার হালুয়া, কেক, রুটি, পুডিং, ইত্যাদির মধ্যে মেশানো যেতে পারে। বাজারে প্রচুর মিষ্টান্ন খাবারে এইসমস্ত রূপেও এটা পাওয়া যায় এবং আপনি যদি আপনার বেশি মাত্রার কফির পরিবর্ত হিসাবে কিছু চান, ডুমুর বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত ইনস্ট্যান্ট কফি প্যাক রূপেও পাওয়া যায়। ডুমুরের মিষ্টি স্বাদ মিষ্টান্নগুলিতে সেই স্বাভাবিক মিষ্টত্ব যোগানোর জন্য একে উপযোগী করে। যাই হোক, যদি আপনি বাজার থেকে ডুমুর কেনেন লেবেলগুলি যত্নসহকারে পড়া নিশ্চিত করুন এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ এবং মেশানো প্রিজার্ভেটিভগুলি দেখুন।    


আনজির এর উপকারিতা :

শুকনো ডুমুর না টাটকা ডুমুর ভালো?

জলশূন্যতা এবং জলে-দ্রবণীয় কিছু পরিমাণ পরিপোষক বাদে, শুকনো এবং টাটকা ডুমুরের পুষ্টিবিধানকারী গুণাবলীতে বেশি কিছু পার্থক্য নেই। বস্তুত:, ডুমুর শুকনো রূপে খাওয়া আরও ভাল পুষ্টিবিধায়ক সম্পূরক হিসাবে পরিচিত। শুকনো ডুমুরে ফেনোলিক উপাদানগুলি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণগুলি টাটকা ডুমুরের থেকে অনেক বেশি পাওয়া যায়।

  • রক্তাল্পতা 

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, ভারতে 15-50 বৎসর বয়স পরিসীমার মধ্যে প্রায় 51% মহিলা রক্তাল্পতাগ্রস্ত। এই সমস্যার জন্য দায়ী অন্যতম শীর্ষ কারণ হচ্ছে খাদ্যে লোহার অভাব। ডুমুর লোহার একটা সমৃদ্ধশালী উৎস যা হিমোগ্লোবিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান (রক্তকোষগুলিতে থাকা যে যৌগ শরীরে অক্সিজেন পাঠানোয় সাহায্য করে)। সমীক্ষাগুলি দেখিয়েছে যে ডুমুরের নিয়মিত ব্যবহার রক্তে হিমোগ্লোবিন উপাদানে একটা বৃদ্ধি এবং রক্তকোষগুলির সংখ্যায় একটা সাধারণ বৃদ্ধি আনে। এই ফলে প্রোটিন এবং ভিটামিন বি উপাদানও রক্তে লোহিত রক্তকোষের সংখ্যা বৃদ্ধিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।   

  • ওজন কমানোর জন্য

আঞ্জীর ফলগুলিতে উচ্চ মাত্রার ফাইবার (আঁশ) অন্ত্রগুলিকে ভারী করে এবং আপনাকে একটা অধিকতর বেশি সময় ধরে পেট ভর্তি হবার একটা অনুভূতি দেয়। এটা আপনার প্রধান খাবারগুলির মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাড়াবে এবং আপনাকে কম খাওয়ায় সাহায্য করবে। এছাড়া, ডুমুরে ক্যালোরি কম, সুতরাং, আপনাকে পেট ভরার অনুভূতি করানো সত্ত্বেও, সেগুলি আপনার ক্যালোরির হিসাব বাড়ায় না। আমরা সবাই কি এমন খাবারের স্বপ্ন দেখিনা যা খেতে যেমন ভাল অথচ রাতারাতি আপনার পোশাকগুলি বেশি আঁটসাঁট করায় না। যাই হোক, ডুমুর অতি পুষ্টিকর কিন্তু যখন দুধের সাথে খাওয়া হয় এটা ওজন বাড়াবার দিকে নিয়ে যেতে পারে। ডুমুর খাওয়ার আগে একবার আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভাল, বিশেষত: যদি আপনি মাত্রাতিরিক্ত ওজনদার হন।


  • টাটকা ডুমুর কেনা:

বাজার থেকে যদি আপনি টাটকা ডুমুর কিনতে যান, কোনও কালশিটে দাগ ছাড়া গোটা ডুমুর দেখুন যেগুলির রং উজ্জ্বল। টাটকা ডুমুরে প্রচুর চিনি এবং ভাল পরিমাণে জল থাকে, সুতরাং কেনার 2 দিনের মধ্যে সেগুলো খাওয়া বাঞ্ছনীয়। যদি আপনি লক্ষ্য করেন কোনও তিক্ত স্বাদ অথবা ছাতা পড়ার মত কোনও বৃদ্ধি দেখেন, ডুমুরগুলো খাবেন না। টাটকা ডুমুর নিরাপদে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ যেহেতু সেগুলো খুব পলকা এবং সহজেই কালশিটে দাগ পড়ার প্রবণতা থাকে।   

আপনি অপক্ক ডুমুরও কিনতে পারেন এবং আপনি সেগুলি খাবার আগে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সেগুলিকে স্বাভাবিকভাবে পাকতে দিন। কম জলীয় উপাদানের কারণে, শুকনো ডুমুর অপক্ক ডুমুরের থেকে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা এবং শুকনো স্থানে যখন স্টোর করা হয় একটু বেশি সময় ধরে টেঁকসই হয়। যদি আপনি একটা গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় বাস করেন, শুকনো ডুমুরগুলি হিমায়িত করে সংরক্ষণ করা বেশি ভাল যেখানে সেগুলি 6-8 মাস পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারবে। যাই হোক, যদি আপনি কোনও বাজে গন্ধ অথবা ছত্রাক বৃদ্ধি লক্ষ্য করেন সেগুলি ফেলে দেওয়াই ভাল।

  • চোখের জন্য

ডুমুর ভিটামিন এ-র একটা উৎকৃষ্ট উৎস হিসাবে পরিচিত যা চোখের দৃষ্টি অক্ষুণ্ণ রাখা এবং চোখ সুস্থ রাখার জন্য দায়ী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিপোষক। নিয়মিত ডুমুর খাওয়া শুধু যে চোখের জন্য ভাল বলে মনে করা হয় তাই নয় উপরন্তু ম্যাকুলার ডিজেনারেশন-এর মত বয়স-জনিত অসুখগুলি যা হচ্ছে চোখের রেটিনার নষ্ট হতে থাকা কোষগুলির কারণে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারানো এবং বর্তমানে নিরাময়ের অসাধ্য, সেটাকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করে বলে জানা যায়।  

  • ঘুম জন্য

গবেষণাগুলি দেখায় যে মেলাটোনিন (এক ধরণের হরমোন) আমাদের শরীরের নিদ্রা/জাগরণ ছন্দ বজায় রাখার জন্য দায়ী। এই হরমোনে একটা ভারসাম্যের অভাব শুধুমাত্র নিদ্রা অভ্যাসের ভারসাম্যহীনতার দিকে নিয়ে যায় তাই নয় উপরন্তু উদ্বিগ্ন হওয়ার অনুভূতি এবং সহজে বিরক্ত হওয়ার দিকেও চালিত করতে পারে। অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রিপ্টোফান-এর একটা উৎকৃষ্ট উৎস হল ডুমুর যার শরীরে মেলাটোনিন-এর মাত্রা বাড়াবার একটা সরাসরি প্রভাব থাকে। গবেষণাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ডুমুরের নিয়মিত ব্যবহার শরীরে ট্রিপ্টোফান-এর মাত্রা বৃদ্ধি করার দিকে চালিত করে এবং এভাবে শরীরে মেলাটোনিন সময়মত মোচনে প্রবৃত্ত করায় যাকে যথার্থভাবেই বলা হয় “নিদ্রা হরমোন”। অসংখ্য গবেষণা দাবি করে যে ঠিক ঘুমের আগে ট্রিপ্টোফান নেওয়া মেলাটোনিন ব্যালান্স করতে সাহায্য করে এবং এভাবে আপনাকে আরও সহজভাবে ঘুমোতে দেয়।    

  • অর্শ ও কোষ্ঠকাঠিন্য জন্য

ডুমুর খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের একটা অত্যন্ত সমৃদ্ধ উৎস এবং একটা ফাইবার-সমৃদ্ধ খাদ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল যে এটা খাবারে ভার বাড়ায় এবং মল নরম করে, এভাবে শরীর থেকে মলগুলো সহজে নিষ্কাশন করায় সাহায্য করে। অতএব, জলখাবারের জন্য এক বাটি ডুমুরের স্যালাড আঁকড়ে ধরুন এবং কোষ্ঠবদ্ধতার দুর্দশা দূরে সরিয়ে রাখুন।

অর্শ হচ্ছে একটা দশা যা মলদ্বারের ভিতর অথবা চারপাশে প্রদাহ (জ্বলন) দ্বারা চিহ্নিত যা মলত্যাগের সময় যন্ত্রণা এবং রক্তপাত ঘটায়। এই সমস্যার সঠিক কারণ অস্পষ্ট কিন্তু অত্যন্ত পরিচিত কারণগুলির অন্যতম হল একটা কম ফাইবারযুক্ত খাদ্য এবং বেঠিক মলত্যাগ। ডুমুর ফলে উভয়ের জন্য একটা সমাধান রয়েছে। ডুমুরে উচ্চ মাত্রার ফাইবার মলত্যাগ নিয়মিত করতে এবং মলগুলিকে আরও নরম করতে সাহায্য করে যাতে পায়ুর উপরে পড়া চাপ কমিয়ে এটা মলদ্বারের মাধ্যমে সহজে বার হয়। 

  •  যকৃত সুস্থ রাখার জন্য

ডুমুর হচ্ছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলির একটা উৎকৃষ্ট উৎস যেগুলি শরীরে অক্সিজেনের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে (অক্সিডেটিভ ড্যামেজ) কোনও প্রকারের ক্ষতির বিরুদ্ধে শরীরের সবচেয়ে ভাল প্রতিরোধক। এর পরিপোষক গুণগুলির সাথে, ডুমুর যকৃৎ থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি দূর করতে এবং সামগ্রিক যকৃৎ স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। পশুদের উপরে গবেষণাগুলি এই ফলের হেপাটোপ্রোটেক্টিভ (লিভারে ক্ষতি প্রতিরোধ করা) ক্ষমতাগুলি সুনিশ্চিত করেছে কিন্তু মানুষের যকৃতে এর প্রভাবের এখনও কোনও প্রমাণ নেই। অতএব, আপনার যকৃতের উপর ডুমুরের প্রভাব সম্বন্ধে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা বাঞ্ছনীয়।   

  • অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট

আপনি যদি সেইসমস্ত ব্যক্তিদের অন্যতম হতে চান যাঁরা বয়সে তরুণ এবং উজ্জ্বল দেখতে চান আপনি হয়তো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সম্বন্ধে জানেন। এগুলি শুধু শরীর থেকে সমস্ত ফ্রি র‍্যাডিক্যালগুলি (ক্ষতিকর অক্সিজেন যা শরীরের পক্ষে বিষাক্ত) খুঁটে সাফ করতে সাহায্য করে তাই নয় উপরন্তু এগুলি হার্ট এবং লিভারের মত বিভিন্ন অঙ্গগুলির স্বাস্থ্য অক্ষুণ্ণ রাখার পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। বিজ্ঞানীরা বলেন যে ডুমুরে থাকা ফেনলস এবং ফ্লেভোনয়েডস (এক ধরণের প্রাকৃতিকভাবে ঘটা রাসায়নিক যৌগ) হল সেই বস্তু যা এটাকে এত চমৎকার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-এ পরিণত করে। তাছাড়া, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি শরীরে অক্সিডেটিভ চাপও কমায় এবং অকাল বার্ধক্য সহ প্রচুর বয়স-জনিত সমস্যা কমায়। 

  • ডায়াবেটিস  রোগে

সমীক্ষাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ডুমুর ফলের ব্যবহার রক্ত শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য সহায়ক। ডুমুরের উপর চালানো একটা সমীক্ষা সবার দৃষ্টিগোচরে এনেছে যে এই ফলের নিয়মিত ব্যবহার গ্লুকোজের প্রতি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়, আর এভাবে রক্ত থেকে আরও বেশি চিনি অপসারণ করে। যাই হোক, এব্যাপারে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা সবচেয়ে ভাল, বিশেষ করে আপনি যদি ডায়াবেটিসে ভোগেন। 

  • ত্বকের যত্নে 

সোরিয়াসিস (লাল, চুলকানি, আঁশযুক্ত ত্বকের ক্ষত), ব্রণ, এবং একজিমার মত ত্বকের অসুখগুলির চিকিৎসায় ডুমুর পরম্পরাগত এবং সাধারণ লোকের মুখে মুখে চলে আসা ঔষধ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। স্থানীয়ভাবে যখন লাগানো হয়, ত্বকে সেগুলির একটা পুষ্টিকর এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রভাব থাকে। ইরানে করা একটা গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে আঁচিল/জড়ুলগুলোর চিকিৎসায় ডুমুর ফলের আঠার (কষ) স্থানীয় প্রয়োগ ক্রায়োজেনিক চিকিৎসার মত (একটা অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় হিমায়িত করা এবং তারপর সেটাকে কেটে বাদ দেওয়া) প্রায় ততটাই কার্যকর। ক্রিয়ার সঠিক পদ্ধতি অজানা কিন্তু বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে ডুমুরের আঠার কিছু প্রোটিয়োলিটিক (যা প্রোটিনগুলিকে ভাঙে) কার্যকলাপ আছে যা আঁচিল/জড়ুলগুলোকে এত কার্যকরভাবে দূর করার জন্য দায়ী।         

  • চুল পড়া রোধে 

ডুমুরের পরিপোষক এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রভাব শুধুমাত্র বেশির ভাগ মাথার খুলির ত্বক সমস্যাগুলির মোকাবিলায় উপযোগী তাই নয় উপরন্তু এটা চুলের পুষ্টিবিধান এবং সেগুলোকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ (কন্ডিশন) করে। ডুমুর বীজের তেল স্থানীয়ভাবে প্রয়োগ করা আপনার চুলগুলিতে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে-র ডোজ দেওয়া হিসাবে পরিচিত যা সেগুলোর স্বাভাবিক চাকচিক্য অক্ষুণ্ণ রাখা এবং চুল পড়া রোধ করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • ফুসফুসের সমস্যার

কাশির এবং সর্দি বিরুদ্ধে ডুমুরের রস একটা পরিচিত প্রতিষেধক। আয়ুর্বেদে, ডুমুর ফলের ব্যবহার গলার থেকে বাড়তি শ্লেষ্মা (মিউকাস) দূর করে এবং গলার পেশীগুলিতে পরিপোষক যোগায় বলে জ্ঞাত। অতএব, আঞ্জীর শুধুমাত্র আপনাকে গলার ব্যথা থেকে নিরাময় করে তাই নয় উপরন্তু এই সমস্যার আবার ফিরে আসা ঠেকানোর জন্য গলাকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। এই গুণগুলি একত্রে ক্রনিক কাশি এবং অন্যান্য একই ধরণের শ্বাসপ্রশ্বাস-সম্পর্কিত সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে ডুমুরকে একটা অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম করে। 

  • রক্তচাপ টিক রাখে 

আজকালকার দিনে উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে হয়তো আপনার দেখা সবচেয়ে পরিচিত সমস্যাগুলোর অন্যতম। একদা যা ছিল মধ্য বয়সের একটা সমস্যা, এটা এখন সারা বিশ্ব জুড়ে সব বয়সের কোঠা এবং লিঙ্গের মধ্যে লক্ষণীয়ভাবে বিদ্যমান। যদিও মানসিক চাপ বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়, জীবনশৈলীর সমস্যা, স্থূলতা, এবং খাদ্য রুচিগুলির এর মধ্যে একটা বড় ভূমিকা আছে, লবণাক্ত এবং মশলাদার খাবার নিয়মিত খাওয়া শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এভাবে আমাদের শরীরের লবণের মাত্রায় একটা ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। যে লবণ শরীরে সোডিয়াম মাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে তা হল পটাশিয়াম। সমীক্ষাগুলি দেখিয়েছে যে ডুমুরের নিয়মিত ব্যবহার পটাশিয়ামের একটা উৎকৃষ্ট উৎস, রক্তচাপ কমাতে যা অত্যন্ত উপযোগী। ফলটা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ যা শরীরে রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য দায়ী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির অন্যতম।    

  • কিডনি  সুস্থ রাখে 

ডুমুর স্বাভাবিকভাবে মূত্রবর্ধক হিসাবে পরিচিত যার অর্থ সেগুলি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ পরিস্কার করে এবং কিডনিগুলি থেকে বাড়তি লবণ এবং জল বার করে দেয়, যার ফলে, কিডনি বেশি সুস্থ রাখে এবং শরীরকে বিষাক্ত পদার্থ থেকে মুক্ত রাখে। একটা বিষ-মুক্ত শরীর শুধুমাত্র ভালোভাবে কাজ করে তাই নয় উপরন্তু এটা স্বাভাবিক মাধুর্যপূর্ণভাবেও বয়স বৃদ্ধি করে।   


  • আঞ্জীর জ্বর কমায় 

আয়ুর্বেদে ডুমুর পাতাগুলি একটা পরিচিত জ্বরনাশক (শরীরের তাপমাত্রা এবং জ্বর কমায়)। সাম্প্রতিক কালে, চিকিৎসাবিদ্যাগত (মেডিক্যাল) গবেষণাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ডুমুর পাতাগুলির একটা এথানল নির্যাসের শক্তিশালী জ্বরনাশক গুণাবলী আছে যা নির্যাসের মাত্রার উপরে নির্ভর করে। কার্যকর প্রভাব প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে স্থায়ী হতে দেখা গিয়েছে যা সবচেয়ে প্রচলিত বাণিজ্যিক জ্বরনাশক ওষুধগুলির চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রদ।  

  • হাড়ের জন্যে

আমাদের শরীরের স্বাভাবিক চক্র হাড়গুলিকে দুর্বলতর করা সহজতর করে এবং আরও বেশি ক্ষয়-ক্ষতিতে ভোগে। যার ফলে, বেশি বয়সে আমরা সহজেই হাড়ের চিড় থেকে ভুগি এবং অস্টিওপোরোসিস-এর মত অসুখগুলি ঘটতে পারে। সৌভাগ্যক্রমে, আমরা আমাদের হাড়গুলির বয়স হওয়া ঠেকাতে বা মন্থর করতে পারি আমাদের খাদ্যতালিকায় একটা ক্যালশিয়াম সম্পূরক গ্রহণ করে। যদিও বাজারে সর্বত্র প্রচুর পরিমাণে বাণিজ্যিক ক্যালশিয়াম সম্পূরক পাওয়া যায়, সেগুলির অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম জমা হওয়া এবং শরীরে পাথর গড়ে ওঠার মত কিছু সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। ক্যালশিয়ামের একটা প্রাকৃতিক উৎস হিসাবে ডুমুর আপনার হাড় এবং দাঁত বেশিদিন ধরে সুস্থ রাখার জন্য আপনার খাদ্যের সাথে গ্রহণ করা সেজন্য অনেক বেশি উপযোগী হয়। ডুমুরে থাকা ক্যালশিয়াম উপাদান মাঠা তোলা দুধের (স্কিমড মিল্ক) ক্যালশিয়ামের সমান বলা হয় (প্রায় 28 gm ডুমুর আপনার ক্যালশিয়ামের দৈনন্দিন চাহিদার প্রায় 5% যোগান দেয়)। ক্যালশিয়ামের সাথে ডুমুর ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাস-এও সমৃদ্ধ যা হাড়ের আরও দুটো উন্নতিসাধনকারী খনিজ।      

  • গর্ভাবস্থা

 ডুমুর ক্যালশিয়ামের একটা উৎকৃষ্ট উৎস যা ভ্রূণের বিকাশ এবং মায়ের হাড় সুস্থ রাখার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজগুলির অন্যতম। তারপর, ফলটার ভিটামিন বি উপাদান গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাস কালে প্রাত: কালীন অসুস্থতার সাথে মোকাবিলা করতে তাঁদের সাহায্য করে। যাই হোক, বেশি খাওয়া এড়ানো উচিত এবং যদি আপনি ডুমুর একটা ওষুধ এবং টনিক হিসাবে গ্রহণ করার জন্য ভাবেন আপনার

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

dnt share any link

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম