হলুদ | Turmeric
হলুদ নামের উৎস আজও অজানা। মহাজাতি বা Genus নাম Curcuma হলুদ নামটা আরবি থেকে আসে।হলুদ হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়া মহাদেশে রান্না শিল্পে ব্যবহার হয়ে আসছে। অন্য দিকে হলুদ একটি ঔষধি গাছ হিসেবে সুপরিচিত।আদার সমগোত্রীয় মশলা, হলুদ পাওয়া যায় দক্ষিণ এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলিতে উৎপন্ন কারকিউমা লোঙ্গা নামে উদ্ভিদ থেকের মূল থেকে। এই উদ্ভিদের মূল বা শিকড় স্ফীতাকার হয়ে থাকে যেখানে রাইজোম প্রস্তুত হয়। এগুলিকে ফুটিয়ে, শুকনো করে নেওয়া হয়, তারপর গুঁড়ো করে আমরা যে পাওডার মেলে, সেটাই আমাদের কাছে হলুদ নামে পরিচিত।
বৈজ্ঞানিক নাম: কারকিউমা লোঙ্গা
পরিবার: আদার সমগোত্রীয় জিঞ্জিবারেসিয়া পরিবার অন্তর্ভুক্ত
সাধারণ নাম: টার্মারিক, হলদি (হিন্দি)
সংস্কৃত নাম: হরিদ্রা
প্রায় খ্রীষ্টপূর্ব 600 সাল থেকে এটি রং করার এজেন্ট বা ডাই হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ভারতের চিকিৎসা শাস্ত্রে বহুদিন ধরে হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে কারণ আয়ুর্বেদ ভেষজ শাস্ত্রে এটি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন শ্বাসকষ্ট, বাত, শরীরের যন্ত্রণা, এবং এমনকি ক্লান্তি নিরসনের জন্যও দেওয়া হয়ে থাকে। কাপড় রং করার জন্যও হলুদের ব্যবহার আছে। বস্তুত, মার্কো পোলো যখন 1280 খ্রীষ্টাব্দে চিন ভ্রমণে যান তখন তিনি হলুদকে কেশরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। মধ্যযুগে ইউরোপে, হলুদকে ‘‘ভারতীয় কেশর’’ বলে অভিহিত করা হতো।
হলুদের একটি ঝাঁঝালো-তিক্ত স্বাদ আছে এবং মাঝে মাঝে খাদ্য বস্তু রং করার কাজেও ব্যবহৃত হয়। ক্যানবন্দি পণ্য, বেকারি পণ্য, ডেয়ারি, জুস, এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যেও ব্যবহার হয়ে থাকে। খাদ্য দ্রব্যের মোড়ক করতে বা রান্নার জন্যও হলুদ পাতা ব্যবহার করা হয়। এই পাতা খাদ্যে একটি নির্দিষ্ট স্বাদ নিয়ে আসে।
হলুদ নিজেই একটি চমকপ্রদ মশলা, কিন্তু যদি এটিকে দুধের সঙ্গে মেশানো হয় তাহলে এর উপকার দ্বিগুণ হয়ে যায়। হলুদ একটি রাসায়নিক যৌগ যার নাম কারকিউমিন যা স্নেহ পদার্থ দ্রবীভুত করে। দুধ গরম করে তার মধ্যে এক চামচ টার্মারিক পাওডার মিশিয়ে টার্মারিক প্রস্তুত করা হয়।
হলুদের পুষ্টি তথ্য
হলুদে আছে 26% ম্যাঙ্গানিজ
16% লোহা।
এটি তন্তু, ভাইটামিন B6, পটাসিয়াম, ভাইটামিন C এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রাসায়নিক যৌগ কারকিউমিন থাকার কারণে হলুদের মধ্যে ভেষজ গুণ আছে বলে ধরা হয়। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এবং এটি প্রদাহরোধী এজেন্ট।
স্বাস্থ্যের জন্য হলুদের উপকারিতা -
হার্টের জন্য হলুদ
WHO -এর মতে সারা বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণ ইসকিমিক হার্টের কারণে অসুস্থতা। হৃদরোগের বহু কারণ থাকতে পারে তবে সুস্থ হার্টের জন্য আমরা সর্বদা আমাদের খাদ্যতালিকায় এবং জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনতে পারি। গবেষণা করে জানা গিয়েছে, কারকিউমিন হচ্ছে অন্যতম একটি গুল্ম যা হার্টের রোগ রুখতে বা এড়াতে সক্ষম। এন্ডোলিথিয়াল কোশের ওপর, হার্টের রক্তনালীর লাইনিংয়ের ওপর, কারকিউলামের ভূমিকা আছে বলে হার্টের ক্ষতি এড়াতে পারে। আমরা সকলেই জানি, ণাস্কুলার এন্ডোথিলিয়ামের সুষ্ঠু কার্যকারিতার ওপর ব্যায়ামের ব্যাপক সদর্থক প্রতিক্রিয়া আছে। একটি সমীক্ষাতে এটাও দেখা গিয়েছে যে এন্ডোথিলিয়ামের কার্যপ্রণালীর ওপর হলুদেরও একই রকম প্রভাব আছে। নিয়মিত হলুদ খেলে আপনার হার্ট দীর্ঘদিন সুস্থ রাখতে তা কাজ করে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে
শুধু হার্টের জন্য নয় মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও হলুদ উপকার করে, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ব্রেন-ডিরাইভড নিউরোট্রোফিক ফ্যাক্টর (BDNF) হচ্ছে এক ধরনের প্রোটিন যা মস্তিষ্কের প্রধান উপাদান হিসাবে কাজ করে। স্নায়ু কোশের পুনরুজ্জীবনে তার মস্ত বড় ভূমিকা আছে। অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সব ব্যক্তি অবসাদ অথবা অ্যালঝাইমার রোগে ভুগছেন তাঁদের অতি অল্প মাত্রায় BDNF থাকে। শারীরিক ব্যায়াম উপকারী এই কারণে যে এটি মানবদেহে স্বাভাবিকভাবে BDNF বাড়ায়। আশ্চর্যজনকভাবে দেখা গিয়েছে, হলুদও একইরকম কাজ দেয়।
নিয়মিত হলুদ খেলে তা BDNF মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যার ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, মস্তিষ্কের অসুখ কমে এবং মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের (সক্রিয় অক্সিজেন স্পিসিজ) সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। ফ্রি র্যাডিকল বহুল পরিমাণে প্রতিক্রিয়াশীল হয় বলে অক্সিডেটিভ ক্ষতি করতে পারে কারণ তারা প্রোটিন এবং ফ্যাটি অ্যসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রি র্যাডিক্যাল থাকলে তা আমাদের কোশের সঙ্গে এমনকি DNA-র পর্যন্ত ক্ষতি করতে পারে। ধূমপান, বায়ু দূষণ, খাদ্যে কীটনাশকের পরিমাণ বৃদ্ধি, ভাজা খাবার ইত্যাদি কারণের জন্য আমাদের শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের মাত্রা বাড়ে। খাদ্য প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলে ফ্রি র্যাডিক্যালের ঊর্ধ্বমুখী হারের সঙ্গে আমাদের শরীর পাল্লা দিতে পারে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি সবজি এবং ফলে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া যায়। একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, হলুদ একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা এই সব ফ্রি র্যাডিক্যালকে নাশ করতে পারে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইমের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। কাজেই যে সব ব্যক্তি নিয়মিত হলুদ খেয়ে থাকেন তাঁরা স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন।
প্রদাহরোধী
ফুলে যাওয়া বা প্রদাহ আমাদের শরীরের পক্ষে খুব জরুরি, কারণ তা ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু পুনরুদ্ধারে এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে শরীরকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আমাদের সিস্টেমে যে প্যাথোজেন প্রবেশ করছে তার সঙ্গে লড়াই করতেও প্রদাহ সাহায্য করে। ক্ষণস্থায়ী প্রদাহ বা কোনও জায়গা ফুলে ওঠা যেমন ব্রণ বা ছোট কোনও ক্ষত শরীরের পক্ষে উপকারী হতে পারে কিন্তু তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে, কারণ তখন তা তার নিজস্ব টিস্যুকে আক্রমণ করে বসে। কোনও স্থান ফুলে থাকা বা প্রদাহ, আকারে ছোট হলেও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়লে তা থেকে হৃদরোগ, মেটাবোলিক সিনড্রোম, এবং ক্যান্সার হতে পারে। হলুদের প্রদাহ প্রতিরোধী গুণাবলী আছে কারণ তা NF-kB ( নিউক্লিয়ার ফ্যাক্টর কাপ্পা বিটা), নামে যে অণু কোশের প্রদাহ বৃদ্ধির জন্য দায়ি জিনকে উত্তেজিত করে সেই অণুকে প্রতিহত করে। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হলুদ প্রদাহ কমাতে আণবিক স্তরে কাজ করে।
ক্যান্সার রোধে
কোশের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে কারণ তা কোশবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে, আণবিক স্তরে ক্যান্সার কোশ বৃদ্ধি, বিস্তার এবং ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। গ্যাস্ট্রোইনেস্টিন্যাল ক্যান্সার (পাকস্থলী ও অন্ত্র), স্তনের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, স্নায়ুর ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার, লিউকেমিয়া এবং লিম্ফোমা জাতীয় ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কারকিউমিন কার্যকরী হতে দেখা গিয়েছে। গবেষণায় প্রমাণিত কারকিউমিন সাধারণ কোশকে প্রভাবিত করে না কিন্তু বিভিন্ন টিউমার কোশ মেরে ফেলে। এই কারণে একটি উপকারী ভেষজ উদ্ভিদ হিসাবে কারকিউমিন প্রমাণিত, যা থেকে বিভিন্ন ওষুধের উন্নতি ঘটানোর কাজে লাগানো হচ্ছে। সুতরাং, নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করা এবং তা প্রতিহত করা সহজ হয়।
অ্যালঝাইমার
সারা বিশ্বে স্মৃতিভ্রংশের সমস্যার অন্যতম মূল কারণ অ্যালঝাইমার (AD) সমস্যা। প্রাচীন ভারতীয় ভেষজ কারকিউমিনের ওপর দীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রেও এর উপকার আছে। বিভিন্ন উপসর্গ যেমন গ্যাস্ট্রিক আলসার, স্তন ক্যান্সার, অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ইত্যাদির চিকিৎসায় এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের আঘাতেও কারকিউমিনের সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। একটি গবেষণায় প্রমাণিত যে হলুদ থেকে পাওয়া কারকিউমিন অ্যালঝাইমার প্রতিরোধে এবং তার চিকিৎসায় কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী থাকায়, এই রোগে যাঁরা আক্রান্ত কারকিউমিন তাঁদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে। লাইপোফিলিক গুণের জন্য কারিকিউমিন ব্লাড-ব্রেন ব্যারিয়ার পেরিয়ে যেতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মস্তিষ্কের কোশে গিয়ে পৌঁছায় এবং অ্যালঝাইমার প্রশমনের কাজ করে। কাজেই, নিয়মিত হলুদ খেলে স্নায়বিক অবনতির (নিউরোডিজেনারেটিভ) কারণে যে সব অসুখ হয় তা দূরে সরিয়ে রাখা যায়।
আর্থারাইটিসের জন্য হলুদ -
যে কোনও বয়সের মানুষের গাঁটে ব্যাথা একটি সাধারণ সমস্যা যাকে আর্থারাইটিস বলা হয়। হলুদের মধ্যে কারকিউমিনের প্রদাহপ্রতিরোধী গুণ থাকার জন্য যাঁরা আর্থারাইটিসে ভুগছেন তাঁদের জন্য উপকারী। একটি পাইলট সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আর্থারাইটিসে যাঁরা ভুগছেন তাঁদের চিকিৎসার জন্য নিরাপদ এবং কার্যকরী।
অবসাদের জন্য হলুদ -
অবসাদের উপসর্গ দূর করতে হলুদ সাহায্য করে এবং যাঁরা অবসাদে ভুগছেন তাঁদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা আছে। একটি নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষায় 60 জন রোগীকে ছয় সপ্তাহ ধরে প্রোজ্যাক (অবসাদ কাটানোর ওষুধ), কারকিউমিন এবং যৌথভাবে দু’টি দেওয়া হয়েছিল। পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল, যে সব অবসাদগ্রস্তদের কারকিউমিন দেওয়া হয়েছিল তাঁদের ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়েছিল এবং পরবর্তী সময়ে তাঁদের মধ্যে কোনওরকম আত্মহননের প্রবণতা বা অন্যান্য মানসিক সমস্যা দেখা যায়নি। শারীরিক পরীক্ষায় এও দেখা গিয়েছে যে কারকিউমিন অবসাদগ্রস্তদের চিকিৎসায় নিরাপদ এবং কার্যকরী হয়ে থাকে।
বার্ধক্যরোধে
মনে করা হয়, ফ্রি র্যাডিক্যাল এবং প্রদাহ এই দু’টি হচ্ছে বার্ধক্য এবং অন্যান্য রোগের মূল কারণ। এটা পরিষ্কার যে কারকিউমিন প্রদাহরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেহেতু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ফ্রি র্যাডিক্যালদের নাশ করে, সুতরাং বার্ধক্যের চিহ্ন দূর করতে কারকিউমিন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া, কারকিউমিন শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইম উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় বলে শরীরে বার্ধক্য নেমে আসার গতি মন্থর হয়।
দাঁতের স্বাস্থ্যে
চিরাচরিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে বহুবিধ ভেষজ গুণের জন্য যুগ যুগ ধরে হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে। একটি সমীক্ষা বলছে, দাঁতে প্লাক হয়েছে কিনা, সাদা চোখে বোঝা যায় না, তা বুঝবার জন্য হলুদ ব্যবহার করা যেতে পারে। হলুদের নির্যাস বেনি-কোজির উপস্থিতির কারণে হলুদ পিগমেন্ট তৈরি হয় যার জন্য প্লাকের রঙ হলুদ দেখায়। এছাড়া প্রদাহপ্রতিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানের জন্য জিঞ্জিভাইটিস, ব্যাথা কমানো, পিরিওডনটাইটিস এবং মুখের ক্যান্সার -এর চিকিৎসায় হলুদ সাহায্য করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- হলুদের মধ্যে যে কারকিউমিন আছে তা অ্যালার্জেন হওয়ায় কারো কারো ক্ষেত্রে হলুদে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এর সংস্পর্শে চর্মরোগ হওয়ার কথা জানা যায়। হলুদের সংস্পর্শে বা হলুদ গ্রহণের পর ত্বে দাগড়া দাগড়া র্যাশ এবং অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- ডায়বিটিস: হলুদে কারকিউমিন বলে যে রাসায়নিক আছে তা ডায়বিটিস আক্রান্তদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।
- গলব্লাডার বা পিত্তকোষ: আপনার পিত্তকোষে সমস্যা থাকলে হলুদ না খাওয়াই শ্রেয়, বিশেষত যদি পিত্তকোষে পাথর (গলস্টোন) থাকে বা পিত্তনালীতে বাধা থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কারকিউমিন পিত্তকোষ সঙ্কুচিত করে ফেলে।
- পাকস্থলীর সমস্যা: হলুদের সঙ্গে অ্যান্টঅ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটতে পারে। যদি ট্যাগামেট, পেপসিড, জ্যানট্যাক, নেক্সিয়াম, বা প্রিভ্যাসিডের মতো অ্যান্টঅ্যাসিডের সঙ্গে একযোগে খাওয়া হয় তাহলে পাকস্থলীতে অম্ল বা অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। সমীক্ষায় প্রমাণিত যে অতিরিক্ত পরিমাণ বা দীর্ঘদিন হলুদ খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল (পাকস্থলী এবং অন্ত্র) সমস্যা হতে পারে এবং পেটের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে।
- হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন পেটের (গ্যাস্ট্রিক) অস্বস্তি বাড়ায় যা থেকে ডায়রিয়া বা বমিভাবের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
হলুব শুধুমাত্র খাদ্যে ব্যবহার হয় না, বহুবিধ প্রাকৃতিক প্রসাধনী দ্রব্যে ব্যবহার করা হয়। পরিচিতির সুবাদে ভারতীয় জীবনযাত্রায় বড় ভূমিকা পালন করে হলুদ, কারণ আমরা এটি শুধু রান্নার কাজে ব্যবহার করি না, ওষুধ এবং প্রসাধনী পণ্য প্রস্তুতেও ব্যবহার করি।
হলুদকে বাস্তবিক একটি চমৎকার মশলা বলা যায় যার একাধিক ব্যবহার আছে। বলা হয়ে থাকে, এক গ্লাস হলুদ মেশানো দুধে এক চামচ করে মধু দিয়ে খেলে আর চিকিৎসকের সাহায্য প্রয়োজন হয় না।
Tags
মসলা