ফ্রেশ মাছ সহজে চেনা

 শেফ দের অন্যতম একটি গুণ হলো ফ্রেশ মাছ মাংস ও সবজি সহজে চেনা।এটা HACCP cp 0,cp 1 ও ফুড প্রিপারেশন আর মধ্যে পড়ে।এ ছাড়াও আমাদের লাইফ স্টাইলেও এসব জানা অনেক জরুরি।আসুন জেনে নেই টাটকা মাছ কিভাবে চিনবেন

মাছের চোখ
টাটকা মাছের চোখ সবসময় স্বচ্ছ হবে। দেখলে মনে হবে মাছটি জীবন্ত। সময়ের সাথে সাথে এই চোখ ঘোলাটে, মৃত হয়ে আসে। যত সময় যায়, চোখ তত নিষ্প্রাণ। ফরমালিনে মাছের মাংস পচে না ঠিকই, কিন্তু চোখের জীবন্ত ভাব নষ্ট হওয়া ঠেকানো যায় না। চোখ দেখলেই চিনে নিতে পারবেন তাজা মাছ। টাটকা বা তাজা মাছের চোখ উজ্জল ,স্বচ্ছ ও ফোলা থাকে। যখন মাছ বাসি হতে থাকে তখন চোখ ঘোলা হয় এবং একসময় গোলপী বা লাল রং ধারণ করে। শেফ জাহেদ এর মতে মাছ যতই বাসী হতে থাকে চোখ ততই গর্তের ভিতর ঢুকে যায়।
কানকোর রং
মাছ কেমন, টাটকা তো? এ প্রশ্ন করলেই ব্যাপারিরা মাছের কানকো তুলে বলেন, দেখুন না একেবারে লাল। টাটকা না হয়ে যায় না। তা দেখে অনেকে বিশ্বাসও করে ফেলেন। কিন্তু যা দেখা যায়, তার সবটা সত্যি নয়। যদি কানকোর রং লালচে মেরুন হয় তবে মাছ টাটকা। আর যদি তা কালচে মেরুন নয়, তবে বুঝতে হবে মাছ বাসি, ভেতরে ভেতরে পচন ধরেছে। তবে ফরমালিনের সাহায্যে কানকোর রং একই রকম করে রাখা যায়। তাই কানকো দেখালেই লাল রংয়ের মোহে ভুলবেন না।
মাছের গন্ধ
টাটকা মাছে কিন্তু টিপিক্যাল মেছো গন্ধ থাকে না। এই গন্ধটা আসে যখন মাছে একটু পচন ধরে অর্থাৎ বাসি মাছে। অবশ্য ফরমালিন মেশানো থাকলে গন্ধে কোনো ফারাক পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে চেনার উপায়? এখানে আপনাকে সাহায্য করবে মাছি। রাসায়নিক মেশানো মাছে বিশেষ মাছি বসে না। সাধারণ মাছেই মাছি বসবে। তবে তারা অবশ্য টাটকা-বাসি তফাত করে না। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারবেন যে, মাছি বসছে মানে সাধারণত কোনো রাসায়নিক মেশানো নেই।
মাছের শরীর ও আইশ
মাছের শরীর চকচকে আর উজ্জ্বল রূপালি রঙের হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মাছ চকচকে রূপালি রঙের বদলে হলদে, লালচে রঙের হয়। শেফ জাহেদ এর মতে, এরকম হলেই বুঝে নেবেন যে মাছটি অনেকদিনের পুরনো। তাজা মাছ সবসময় চকচক করবে, সময় যাওয়ার সাথে সাথে চকচকে ভাব একেবারেই ম্লান হয়ে যাবে তা সে যতই ফরমালিন দেয়া হোক না কেন। আইশ পর্যবেক্ষন করার সময় আপনি মাছের মাথার শেষ অংশ থেকে মধ্যেবর্তী অঞ্চলে আংগুল রেখে মাছের শরীরে উপর থেকে লেজ পর্যন্ত টান দিবেন। আংগুলের টান দিতে গিয়ে যদি দেখেন মাছের আইশ শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে তবে বুঝবেন মাছ টি বাসি। আর যদি দেখেন আইশ শরীর থেকে বের হচ্ছে না অথবা কয়েকবার টান দেওয়ার পর একটা দুইটা আইশ আংগুলের টানের সাথে বের হচ্ছে তবে মাছটি ভাল। মাছ হাতে নিলে যদি পিছলে যায় তাহলে বুঝবেন মাছটি টাটকা।
পাখনা ও লেজ
অনেক ব্যাপারিই শুধু মাছের শরীরের উপরই নজর দেন। সেখানেই ফরমালিন দ্রবণ দেন কিংবা বরফ দেন। কিন্তু পাখনা বা লেজের দিকে নজর দেন না। যদি দেখেন সেগুলো কোঁচকানো, কুঁকড়ে গিয়েছে তবে বুঝতে হবে মাছটা বাসি। তবে পাখনা দেখে অনেক সময় বোঝা যায় না। সেগুলো এমনিতেই কোঁকড়ানো থাকে। তাছাড়া মাছ বিক্রেতারা তা কেটেও রাখেন। তবে গোটা মাছ বা বড় মাছ কেনার সময় এই লক্ষণ দেখে অবশ্যই ভালো-মন্দ বুঝতে পারবেন।
কাটা মাছ টাটকা কি না বুঝবেন কীভাবে ?
ভালো করে লক্ষ্য করুন, মাছের আশেপাশে কোনো সাদা বা ফ্যাকাশে রঙের জল আছে কিনা। যদি থাকে, বুঝবেন মাছ ভালো নয়। টাটকা মাছের আশেপাশে স্বচ্ছ জল থাকবে।ছোট মাছের পেট ফাঁক করে যদি দেখেন ভিতরের পটকাটি লাল ও ভেজা, তাহলে বুঝবেন তাজা মাছ। পুরনো মাছের পেটের ভেরতটা শুকনো হয়ে কেউ কেউ মাছের পেটি কিনে থাকেন। অল্প চাপ দিয়ে দেখুন, যদি কাঁটা থেকে মাছটি আলাদা হয়ে যায় তবে জানবেন সেটি টাটকা মাছ নয়।
টাটকা চিংড়ি মাছ চিনবেন কীভাবে ?
চিংড়ি মাছের ক্ষেত্রে কিন্তু পদ্ধতি ভিন্ন। যদি চিংড়ি মাছের খোসা শক্ত আর ক্রিসপি থাকে, তাহলে মাছ তাজা। যদি খোসা নরম আর নেতিয়ে পড়া হয়, তাহলে মাছ ভালো নয়।চিংড়ি মাছ হাতে নিতে গেলে সহজেই মাথা ভেঙে যায় কিনা দেখুন। যদি তা হয় তাহলে বুঝবেন মাছ টাটকা নয়।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

dnt share any link

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম