'চাওমিন' vs 'নুডলস'

'চাওমিন' vs 'নুডলস' 

'চাওমিন' vs 'নুডলস'
'চাওমিন' vs 'নুডলস'



দেশে যত জায়গায়, যত রকম চাইনিজ খাবার পাওয়া যায় তত আমাদের দেশীয় খাবারও বোধ হয় পাওয়া যায় না। 

দেশে আসার পর সিলেট শহরের তো এক-দু’পা গেলেই চোখে পড়বে চাইনিজ রেস্তোরাঁ। মেনুও বেশ বাহারি। কিন্তু ইনোভেটিভ তো মোটেই না।


স্বাদে প্রায় কোনও মিলই নেই চিনের খাবারের সঙ্গে। বেশ কিছু খাবার তো আবার সে দেশে পাওয়াও যায় না। মনে হয় এ দেশই  চিনা খাবারে সংযোজন হয়েছে সে সব নাম। আমি খেলাম এমনই একটা চাইনিজ খাবার মনে হচ্ছে যা শুধু এ দেশেই পাওয়া যায়। বিফ চাওমিন বা ফিউশন নুডমিন (নুডলস ও চাওমিন)। 

চিকেন পিক্কাতা  |  Chicken Piccata Bangla  Recipe

ফ্রেন্স অনিয়ন স্যুপ  |  French Onion Soup Bangla  Recipe

নুডলস আর চাওমিন কিন্তু এক জিনিস নয়। না হলেই বা কি? নুডলস আর চাওমিনের পার্থক্য নিয়ে কে ভাবতে যাবে? কিন্তু স্বাদের মতো দুটি শব্দের অর্থেরও তফাৎ আছে। 

নুডলস হল ময়দার মণ্ড দিয়ে তৈরি একটি খাবার। অর্থাৎ ময়দা থেকে তৈরি প্রথম ধাপ বা ‘র’ নুডলস।

সেদ্ধ করার পর আর রান্না করা হয়না। যা সেদ্ধ করে সালাদ বা অন্য কিছু মিলিয়ে খেতে পারেন। আবার এই নুডলস দিয়ে যখন কোনো ডিশ বানানো হয় তখন তাকে বলা হয় চাওমিন। চাওমিন কথাটি দুটি শব্দ মিলে তৈরি। 

চাওমিন চাও (Chow) শব্দের অর্থ ভাজা এবং মিন (Mein) শব্দের মানে নুডলস। সব মিলিয়ে ভাজা নুডলস।

আজকের ইংরেজি Chow mein-এর উৎস চিনা ভাষায় Chāu-Mèing শব্দ। চিনের দক্ষিণ পশ্চিমের শহর তাশিয়ান বা তোশিয়ান। অতীতে সেখান থেকে বহু মানুষ গিয়ে বসতি গড়ে তুলেছিলেন উত্তর আমেরিকা। তাদের দৌলতে চিনা খাবার জনপ্রিয় হয় আমেরিকাবাসীর কাছে। উচ্চারণ পাল্টে চাউমিং হয়ে যায় আমেরিকান উচ্চারণে চাওমিন।

এককথায়‚ সব চাওমিনই নুডলস। কিন্তু সব নুডলস চাওমিন নয়। কারণ শুধু সেদ্ধ করে খেলে তা রয়ে যাবে নুডলসই। কিন্তু যেই না ভাজা হবে‚টস করা হবে‚মেশানো হবে রকমারি সস আর সব্জি‚ তখন সেটি হবে চাওমিন।

চাওমিনের নানারকম ঘরানা আছে। যেমন চাইনিজ‚ কানাডিয়ান চাইনিজ‚ ইন্ডিয়ান চাইনিজ‚ আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান। কিন্তু নুডলসের অত প্রকারভেদ নেই। সেদ্ধ করো আর খাও। বরং‚ তাতে মেশান হয় স্যুপ আর সালাদ।

বেশিরভাগ চাইনিজ রেস্টুরেন্টেই চাউমিনটাই বেশি প্রাধান্য পায়।

তবে বিভিন্ন দেশের চাইনিজ রেস্টুরেন্টে তৈরী হওয়া চাওমিন, সেই দেশের ট্রাডিশনাল ও এথনিক টেস্টে তৈরী হয়। তাই দুবাই  আর ভারত/বাংলাদেশের চাওমিন হবে ভিন্ন স্বাদের।

আর নুডলস হল একধরনের খাবার যা ঝটপট খাবার (ইন্সট্যান্ট ফুড) হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। নুডলসের উৎস নিয়ে কিছু মতভেদ থাকলে অধিকাংশ মত অনুযায়ী এটা চীনদেশীয় খাবার বা চীনাদের আবিষ্কার। ময়দার তাল থেকে বিভিন্ন ধরনের নুডলস তৈরী করা হয়ে থাকে। লম্বা, সরু সুতার মত দেখতে নুডলসই বেশি দেখা যায়। তবে এটা ঢেউ খেলানো, নলাকার, খোলসাকার, ভাজ করা ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। নুডলস সাধারণত ফুটন্ত পানিতে রান্না করা হয়। অনেকসময় রান্নার তেল ও লবন ব্যবহার করা হয়। এদেরকে প্রায়শই কড়া ভাজা করা হয়। চাটনির দিয়ে নুডলস পরিবেশন করা হয়। অল্প সময় সংরক্ষণের জন্য নুডলস রেফ্রিজারেটরে রাখা হয়। নুডলস শব্দটি জার্মান শব্দ নুডেল থেকে এসেছে।

নুডলসের উৎস অমিমাংসিত। দাবী করা হয়ে থাকে নুডলসের চীনা, আরবীয় ও ইউরোপীয় উৎসের। একটি নিবন্ধে দাবী করা হয়েছে নুডলস খাওয়ার সব থেকে পুরতন নিদর্শন রয়েছে ৪০০০ বছর আগেকার চীনে। 

একটা ব্যাপার সম্পর্কে জানতে চাই, চিন তো আমাদের কাছের দেশ, আমাদের উত্তরবঙ্গ থেকে চিন বেশি দূরে নয়, উত্তরবঙ্গের খাবারে চিনা প্রভাব কেমন আর চিনের দক্ষিণ প্রান্তের খাবারে আমাদের উত্তরবঙ্গের প্রভাব সম্পর্কে আপনার কি মতামত সেটা জানাতে পারেন। সমৃদ্ধ হবো। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

dnt share any link

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম